লগ্নির টানে আইনও ভেসে যাবে?

উন্নয়নের বড় গলায় সবুজ ফিতের ফাঁস আগাগোড়া কাল্পনিক


শুরুতে গল্পটা সংক্ষেপে বলা দরকার। উন্নয়নের গপ্পোও বলতে পারেন, বা জঙ্গল কেটে, জঙ্গলবাসিদের উৎখাত করে জল-জমি-আকর লুটের। এ গল্পের শুরু প্রায় দু’শ বছর আগে। সাঁওতাল বিদ্রোহেরই তো ১৫৮ বছর হবে এই ৩০ তারিখকিন্তু আমরা গল্পটায় ঢুকবো এই সময়।
ধন্দটা কেটে যায় ২০১১-র গোড়াতেতার আগে প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলেই অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে জল-জঙ্গলের চৌহদ্দিতে যত্রতত্র উন্নয়ন প্রকল্পের হিড়িক । কিন্তু অনেকেই বিশ্বাস করতে চাননি যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আর অরন্যের অধিকারের মতো দু-দুটো মোক্ষম আইন সংসদে সংশোধন আর পাশ (২০০৬) করানোর পরেও এই সরকার সত্যিই খাদান আর কারখানার জন্য জঙ্গল চেঁছে ফেলে আদিবাসিদের বেঘর করতে চায়।
তার ওপর, ২০০৮-এ পরিবেশ মন্ত্রির পদে এসে জয়রাম রমেশ সকাল-বিকেল ‘আমি-তোমাদেরই-লোক’-মার্কা ধুন গেয়ে প্রকৃতিপ্রেমিদের মনে এক আষাঢ়ে আশা জাগিয়েছিলেন। তাই অধিকাংশেরই ধারনা ছিল যে ওই যেকোন-মূল্যে-উন্নয়নের তাগিদ মূলত মনমোহন সরকারের কিছু আগমার্কা ‘প্রগতি’শীল মন্ত্রির মন্ত্রকপ্রসুতএমন ভবিষ্যবানীও শোনা গিয়েছিল যে সনিয়া ‘নব-সমাজবাদী’ গান্ধীর এজলাসে তাদের অত্যুৎসাহে বালুকাপাত অনিবার্য।
কিন্তু বালি রইল মরিচিকাই। বদলে, গুড়ে মাছি এল ভনভনিয়ে। শুরুটা পরিবেশ মন্ত্রকেই। ছাড়পত্র পেল লাভাসা (মহারাষ্ট্র) আর পসকো (ওডিশা)। সম্ভবত উপায় ছিল না কারণ যোজনা দপ্তর ইতিমধ্যেই ছাঁটতে শুরু করেছিল পরিবেশ মন্ত্রকের আর্থিক বরাদ্দ দুধ দিয়ে কালসাপ পোষা-জাতীয় মন্তব্য আমলা মহলে নৈমত্তিক হয়ে ওঠার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-ও জানুয়ারি ২০১১-তে বিদেশী বিনিয়োগে একতৃতীয়াংশ কমতির জন্য আঙ্গুল তুলল environmentalism-এর  দিকেইবাকি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ফেব্রুয়ারী-তে তিনিও হুঁশিয়ারি দিলেন যে সবুজ আইনের বিবিধ বিধি-নিষেধ নাকি প্রাক-অর্থনৈতিক উদারীকরন যুগের ‘লাইসেন্স-পারমিট রাজ’ ফিরিয়ে আনবে।
পসকো আর ভেদান্ত-র মতো বিতর্কিত প্রোজেক্টকে বেআইনি ছাড়পত্র দেবার চাপের পেছনে ছিল বিদেশী বিনিয়োগের অজুহাত। তার সঙ্গে এবার যোগ হল জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। বোঝানো হল কয়লার অভাবে দেশে তাপবিদ্যুতের আকাল। জঙ্গল কেটে নতুন কয়লা খাদান না খুঁড়লে শিল্পের ভরাডুবি আসন্ন।
প্রধানমন্ত্রির দাবড়ানিতে অরন্যের অধিকার আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পসকো-কে ওডিশায় কারখানার অনুমতি দিয়েই অকুতভয় রমেশ লেগে পড়েছিলেন তার বিনা-আস্ফালনে-নাহি-দিব-সুচ্যগ্র-জঙ্গল ইমেজ পুনরুদ্ধ্বারে। তার পরিবেশ মন্ত্রক সাড়ম্বরে ঘোষণা করল যে কোন জঙ্গল কাটা যাবে আর কোনটা যাবে না (go, no-go) তার হিসেব-নিকেশ না হওয়া পর্যন্ত কোন নতুন খাদানের অনুমতি মিলবে না। কয়েক মাসের মধ্যেই কয়লা মন্ত্রী শ্রিপ্রকাশ জইসয়াল-এর সামনে পরিবেশ মন্ত্রীকে তার কাটা-যাবে-না তালিকা থেকে কেটে দিতে হল ৮৫ শতাংশ জঙ্গল ।
শুধু বিদেশী বিনিয়োগ আর বিদ্যুৎ নিরাপত্তাই নয়, ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় রাজমার্গ নির্মাণযজ্ঞেও বাধা সাব্যস্ত হয়েছে সংরক্ষণ আর অরন্যের অধিকার আইনগুলিদেশের দু-দশটা টিকে থাকা নিরবচ্চ্ছিন্ন অরন্যপ্রসরকে হাইওয়ে ছুটিয়ে ফালাফালা না করলে নাকি প্রকল্পের সুবিধা ও সাশ্রয় কোনটাই সম্ভব নয়। সব মিলে ২০১২ নাগাদ অবস্থা পৌঁছে যায় এমন পর্যায়ে যে জাতীয় অর্থনীতির যা কিছু সমস্যা তার দায় চাপে, বরং চাপিয়ে দেওয়া হয়, পরিবেশ মন্ত্রক নামক কেষ্টার ওপর।
চাপিয়ে দেওয়া বলছি কারণ কাগজে-কলমে দেখা যাচ্ছে ঠিক উল্টোটাই। উন্নয়নে বাধা হওয়া দুরে থাক, উন্নয়নের নামে কানুনের পরোয়া না করেই জারি করা হচ্ছে ঢালাও ছাড়পত্র। রমেশের আমলে  (২০০৮-২০১১) পরিবেশ মন্ত্রকে জমা হওয়া প্রকল্পের দরখাস্তের মধ্যে খারিজ হয়েছিল মাত্র ১ শতাংশ একাদশ ও দ্বাদশ যোজনায় ২০১৭-এর মধ্যে মোট ১,৫০,০০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত তাপবিদ্যুতের লক্ষ্য রাখা হয়েছে ২০০৭ থেকে ২০১১ এর মধ্যে পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র পাওয়া প্রোজেক্টের উৎপাদনক্ষমতা ২,১০,০০০ মেগাওয়াট, যা কিনা ২০১৭-এর সরকারি লক্ষ্যের চেয়েও ৪০ শতাংশ বেশি। ১৯৮২ থেকে ধরলে, ৯৪ শতাংশ কয়লা খাদানের দরখাস্ত অনুমতি পেয়েছে পরিবেশ মন্ত্রকের
তথাকথিত উন্নয়নপন্থিদের আরেক বড় অভিযোগ ছাড়পত্র মিলতে মিলতে সবুজফিতের ফাঁসে নষ্ট হয় অনেক সময়। পরিসংখান কিন্তু অন্য কথা বলে। ১৯৮২ থেকে ১৯৯৯ এর মধ্যে প্রোজেক্ট ফাইলে ফয়সালা হতে সময় লাগতো গড়পড়তা পাঁচ বছর। বিজেপি আমলে এটা কমে দাঁড়ায় তিন বছরে। প্রথম ইউপিএ সরকারের পরিবেশমন্ত্রী এন্দিমুথু ‘টু-জি’ রাজা প্রোজেক্ট-পিছু সময় নিতেন মাত্র ১৭ মাস। ২০০৮ থেকে রমেশের পরিবেশ মন্ত্রক গড়ে ১১ মাসে ছাড়পত্র বিলোতে শুরু করে
গত দু বছরে, রমেশের উত্তরসূরি জয়ন্তি নটরাজনের হাতে সেই ধারা অব্যহত। আঞ্চলিক জনগোষ্ঠী এবং বিশেষজ্ঞদের তীব্র বিরোধিতার তোয়াক্কা না করে, ৫০,০০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যপুরনে তিনি ইতিমধ্যেই অরুনাচলের তাওয়াং আর লোহিত-এ দুটি অতিকায় বাঁধের অনুমতি দিয়েছেন। অরুনাচলেই ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রস্তাবিত আরও ১৫০টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অবাস্তবতার বিরুদ্ধে তার মন্ত্রক এখনো রা কাড়েনি।
তাহলে সংঘাতটা কোথায়? সমস্যা হল যে কিছু বড় প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংরক্ষণ সংস্থা আর পরিবেশবিদ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছে গ্যাছেন। ভেদান্তের আর পসকো-র ক্ষেত্রে কোর্টের রায় গ্যাছে সরকারের বিরুদ্ধে। বন্যপ্রাণী বা অরন্য আইন নয়, অরন্যের অধিকার আইনে আটকেছে স্থানীয় আদিবাসিদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে জবরদস্তি প্রকল্পের প্রয়াস। একই রকম ভাবে, মূলত বন্যপ্রাণী আইনের ধারায়, বেশ কিছু হাইওয়ে প্রকল্প ফেঁসে আছে কোর্টে। শেষপর্যন্ত go, no-go তালিকা তৈরি হলে বেশ কিছু খাদানের বিলিবন্দবস্তও খারিজ হতে পারে।
সত্যি কথা বলতে কিছু কট্টরপন্থি ছাড়া, পরিবেশপ্রেমী কেউই কিন্তু বিদেশী বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ উৎপাদন কিম্বা হাইওয়ের বিরুদ্ধে নন। তাদের আপত্তি অন্য জায়গায়। ভারত দুনিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। এখানে বিদেশী পুঁজির লগ্নি অবধারিত। সেজন্য সরকারের কোনো বহুজাতিক কোম্পানির অন্যায় আবদার মেনে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ওডিশার নিয়ামগিরির আদিবাসিরা যদি তাদের পাহাড়ে খাদান না চায়, কিম্বা ঢিঙ্কিয়ার বাসিন্দাদের যদি পসকো কারখানা থেকে পানের বরজ বেশি লাভজনক মনে হয়, বিদেশী বিনিয়োগের নামে তাদের উৎখাত শুধু অযৌক্তিকই নয়, অরন্যের অধিকার আইন প্রনয়নের পর, বেয়াইনিও বটে।
আর মোটা বিদেশী লগ্নিতে কি সত্যিই লাভবান হবে দেশের অর্থনীতি? পসকোর কথাই ধরুন। ওডিশার কারখানায় বিদেশী বিনিয়োগ হবে ৫২ হাজার কোটি টাকার। চাট্টিখানি কথা নয়, কিন্তু এর বদলে সরকার কি দেবে পসকো-কে? ২০০৫-এর মৌ অনুযায়ী পসকো ৩০ বছর ধরে ভারতে বাৎসরিক ৬০০ মিলিয়ন টন লৌহ আকর খুঁড়ে বের করবে যা আন্তর্জাতিক বাজারে কিনতে হলে কোম্পানিকে অতিরিক্ত খরচ করতে হত অন্তত ৩৭২ হাজার কোটি টাকা
আরও আছে। ২০০৫-এর চুক্তিতে পসকো তার কোরিয়ার কারখানার জন্য ভারতের বাজার থেকে অতিরিক্ত ৪০০ মিলিয়ন টন লৌহ আকর কিনতে পারবে। দেশি আর আন্তর্জাতিক বাজারে লৌহ আকরের দামের ফারাক টন পিছু ৩০০০ টাকার হিসেবে স্রেফ রপ্তানিতেই পসকোর মুনাফা আরও ১৭৪ হাজার কোটি টাকা এছাড়া স্পেশাল ইকনমিক জোনের সুবাদে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পসকো করবাবদ ছাড় পাবে আরও ৩১৪ হাজার কোটি টাকা। এত কিছুর পরেও কোম্পানি ওডিশার কারখানায় তৈরি ইস্পাত ভারতে বেচবে আন্তর্জাতিক দামেই।
একের পর এক জঙ্গল কেটে খাদান খোঁড়ার তাগিদও একইরকম আত্মঘাতী । লৌহ আকর রপ্তানিতে অস্ট্রেলিয়া আর ব্রাজিলের পর ভারত বিশ্বে তিন নম্বরে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় আর ব্রাজিলে যেখানে মাথাপিছু আকরের আমানত ২০০০ ও ৩৩৩ টন, সেখানে ভারতের রসদ মাত্র ২১ টন। এই হারে রপ্তানি চললে আগামী ১৫-৩০ বছরেই আমাদের লৌহ আকর আমদানি শুরু করতে হতে পারে।
তাপবিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী দেশে নাকি কয়লার ঘাটতি ২০ শতাংশকিন্তু মন্ত্রী জইসয়াল নিজে স্বীকার করেছেন যে দুর্নীতির কারনে মার খায় ২৫-৩০ শতাংশ কয়লা উৎপাদন। তাছাড়া, মান্ধাতার আমলের বণ্টনব্যবস্থার কল্যানে উৎপাদনকেন্দ্র আর উপভোক্তার মাঝখানে নষ্ট হয় ২৫-৩৫ শতাংশ বিদ্যুত। অন্যদিকে একের পর এক কয়লা খাদান আগলে উৎপাদন শুরু না করে ভবিষ্যতে বেশী মুনিফার আশায় বসে থাকা কোম্পানিরা কয়লার ঘাটতির অজুহাতে নিত্যনতুন বনাঞ্চলে খাদান খোলার দাবী করে চলেছে
হাইওয়ের কথাই ধরুন। অতীতে সমস্ত পথই তৈরি হয়েছিল জঙ্গল ভেদ করে মানুষের পায়ে চলার রেখায়। গত দুই শতকে সেসব পথে প্রথমে ঘোড়া, তারপর ঘোড়াগাড়ি, আধুনিক গাড়ি থেকে আজ ঘণ্টায় শয়ে-শয়ে গাড়ি ছোটেযে দু-দশটা জায়গায় এখনও পুরনো জঙ্গল টিকে আছে, সেখানে আইন এবং কাণ্ডজ্ঞান বলে যে হাইওয়ে বিকল্প জায়গা থাকলে তার রাস্তা বদলাবে অথবা বন্যপ্রাণীর অবাধ যাতায়াতের জন্য জমি ছেড়ে জঙ্গলের পরিসরটুকু ফ্লাইওভার হয়ে পার হবে।
বাকি জায়গার কথা ছেড়েই দিন, মহারাষ্ট্র-ছত্তিসগড় আর মহারাষ্ট্র-মধ্যপ্রদেশের মাঝখানে কানহা, পেঞ্চ, তাদোবা, নাগজিরা, নাভেগাঁও, ইন্দ্রাবতির মত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরা ব্যাঘ্রসঙ্কুল অরন্যপ্রসরেও ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি এতটুকু ডাইনে-বাঁয়ে করতে রাজি নয়। অগত্যা রাষ্ট্রীয় রাজমার্গ ৬ এবং ৭–এর ভবিষ্যত ঝুলে আছে সেই সুপ্রিম কোর্টে।
আমাদের পরিবেশ আর জনজাতির অধিকারের আইনগুলি যথেষ্ট প্রাঞ্জল। কোন প্রকল্পের দূষণ, বন আর বন্যপ্রাণীর ওপর কি প্রভাব পড়বে তার সমীক্ষায় কিছুটা সময় লাগারই কথা। কিন্তু পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র নিয়ে যেকয়টি প্রকল্পে দীর্ঘ টানাপড়েনের অভিযোগ তার সব ক্ষেত্রেই দায়ী সরকারের যেকোনো মূল্যে, প্রয়োজনে আইন ভেঙ্গেচুরে, প্রকল্প চালু করার চেষ্টা।
গত সেপ্টেম্বরে, যোজনা দপ্তরের কর্ণধার মন্তেক সিং আলুওালিয়া দিল্লীতে এক সংবাদপত্রের ঘরোয়া বৈঠকে কিছু চমকপ্রদ মন্তব্য করেছিলেন। যেটুকু ছাপা হয়েছিল তার মধ্যে ছিল আইন ভাঙ্গার দায় থেকে আমলাদের রেহাই দিতে তার ফাইল নোটিং-এর পরিবর্তে ‘স্পিকিং অর্ডার’ প্রথা চালু করার পরামর্শ ঝুলি থেকে বেড়ালটি শেষমেশ বেরিয়ে পরে হাজার কোটি টাকার বেশী লগ্নির প্রকল্পের তৎকাল অনুমোদন প্রসঙ্গে। অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম বলেছেন, আলুওালিয়া জানান, যে প্রয়োজনে ‘রুলস অব বিসনেস’ বদলে ফেলতে হবে যাতে যে সব প্রকল্পকে ছাড়পত্র দিতেই হবে যেন দেওয়া যায়।
সহজ ভাষায়, কাগজে-কলমে যতই কড়া হোক, আইন থাকবে আইনের জায়গায়। আর জলে-জঙ্গলে-খাদানে বড় লগ্নির তৎকাল অনুমোদন থাকবে আইনের আওতার বাইরে। যতদিন না সেটা সম্ভব হচ্ছে উন্নয়নের এই কাল্পনিক বিপন্নতা কাটার নয়।

No comments: